Bikes Compare

পুরাতন বাইক কিনতে সতর্কতা

পুরাতন বাইক কিনতে সতর্কতা

May 22, 2021

মোটরবাইকের জনপ্রিয়তার বিষয়ে নতুন করে বলার কিছু নেই। প্রতিদিনই শখ আর প্রয়োজনের মিছিলে বাড়ছে এর ব্যবহারকারীর সংখ্যা। তবে সাধ্য আর প্রয়োজন বা শখের মাঝে সমন্বয় ঘটাতে অনেকেই পুরাতন মোটরবাইক কেনেন। পুরাতন বাইক কেনার ক্ষেত্রে অবশ্যই ক্রেতাকে কিছু বিষয় সতর্ক হতে হবে। অন্যথায় বাইক হয়ে উঠবে আপনার ঘাড়ের উপর উটকো বোঝা।

পুরাতন বাইকের ক্ষেত্রে প্রথমেই যে বিষয়টি সামনে আসে, তা হলো দাম। সাধারণত এক্সটার্নাল এবং ইন্টারনাল মেকানিক্যাল কন্ডিশনের উপর নির্ভর করে বোঝা যায় মোটর সাইকেলটি কতদিন ব্যবহার করা হয়েছে এবং এটি কত মাইলেজ পথ চলেছে। পুরাতন বাইকে কতদূর পর্যন্ত চালানো হয়েছে মিটারে তার হিসেব থাকে। এসবের উপর ভিত্তি করে একই কোম্পানির ওই মডেলটি বাজারে নতুন কতটাকায় বিক্রি হচ্ছে? এসব বিবেচনায় নির্ধারণ করা হয় পুরাতন বাইকের দাম। এসবের সঙ্গে ক্রেতার বাজেট আর বিক্রেতার চাহিদার সমন্বয় ঘটলেই অর্থের বিনিময় হস্তান্তর বা ক্রয়-বিক্রয় হয় একটি পুরাতন বাইক।

বাইকের যান্ত্রিক পরিস্থিতি বুঝতে একজন দক্ষ বাইকার বা একজন মেকানিককে সঙ্গে নিলে ভালো। এতে করে তিনি বাইকটি একবার চালালেই বুঝতে পারবেন কি কি সমস্যা আছে বা আদৌ কোনো সমস্যা আছে কিনা। বিক্রেতার বক্তব্য আর বাইকের বাস্তবতার মিল কতটুকু সেটিও নিশ্চিত হওয়া যাবে। প্রয়োজনে বাইকটি বিক্রেতার সম্মতি নিয়ে একজন এক্সপার্টকে দেখানো যেতে পারে।

এর পর কোনো সমস্যার বিষয়ে নিশ্চিত হওয়া গেলে দেখতে হবে সেটি মেরামত খরচ কত হতে পারে। এক্ষেত্রে একজন এক্সপার্ট অবশ্যই প্রয়োজন। কারণ মেরামতের বিষয়ে সাধারণত দক্ষ চালকের চেয়ে দক্ষ মেকানিক ভালো সহযোগিতা করতে পারেন। সাধারণত পুরাতন বাইকে কিছু না কিছু কাজ করাতেই হয় কেনার পর। এটাকে রিপেয়ার কস্টও বলা হয়।

এ ক্ষেত্রে ক্রয় মূল্য আর মেরামত খরচ যেন নতুন বাইকের দামের কাছাকাছি হয়ে না যায়। বা মেরামতের পর যে ভিত্তি মূল্য দাঁড়াবে তার চেয়ে আপনার খরচ বেশি হয়ে না যায় সে দিকে খেয়াল রাখতে হবে। এক্ষেত্রে সুবিধা হয় কোনো যন্ত্রাংশ পরিবর্তন করা লাগলে সেটির বাজার মূল্য এবং সংযোজন খরচ কত পড়বে সেটি খেয়াল করা। বাইকের সব থেকে দামি অংশগুলো হল ফ্রেম, ফর্ক, ফুয়েল ট্যাঙ্ক, ইঞ্জিনকভার এবং ইঞ্জিন। তাই বাইকের এই অংশগুলো ভালভাবে পর্যবেক্ষণ না করলে পরবর্তিতে প্রচুর টাকা খরচ হয়ে যেতে পারে।

এসবের পরই যে বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে দেখতে হবে সেটি হচ্ছে কাগজপত্র। লাইসেন্স বা রেজিস্ট্রার করা আছে কিনা। যদি থাকে তবে সেটি সঠিক কিনা। একই সঙ্গে গাড়ির নামে কোনো মামলা আছে কিনা। আরেকটু নিরাপদ থাকার জন্য খোঁজ নেয়া উচিৎ বিক্রেতা নিজেই ওই বাইকের মালিক কি না। যদি না হন তবে নিশ্চিত হতে হবে অন্যের নামের গাড়িটি তিনি কেন বিক্রি করছেন। কারণ এখন কাগজপত্রসহ গাড়ি চুরি হওয়ার ঘটনা ঘটে থাকে। আবার চুরি হওয়া গাড়ি বিক্রির সময় নকল কাগজপত্র উপস্থাপন করা হয়। তাই বিক্রেতার পরিচয়, তার ভোটার আইডি এবং গাড়ির কাগজে উল্লেখিত নাম, পরিচয় মিলিয়ে দেখতে হবে অবশ্যই। যদি কোনো অসংগতি থাকে তবে সেটি নিয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে হবে।

এরপর দেখতে হবে সরকারি বিভিন্ন ফি সঠিকভাবে পরিশোধ করা হয়েছে কিনা। সে কাগজপত্রগুলো সঠিক কি না। এসব দিক যাচাইয়ে বেশ বেগ পেতে হতে পারে যদি বিক্রেতার সহযোগিতা পাওয়া না যায় বা প্রয়োজনের তুলনায় অপ্রতুল হয়। তাই ক্রয়ের আগেই এই বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা করতে হবে। তারপর দেখতে হবে ইঞ্জিন এবং চেসিস নম্বর সঠিক কিনা।

সঠিক রেজিস্ট্রেশন, ফৌজদারি মামলা, কোনো ক্রিমিনাল অফেন্সে বাইকটি ব্যবহারের অভিযোগ বা নাম ট্রান্সফার করে আপনার নামে নিয়ে আসা যদি অনেক ব্যয় সাপেক্ষ হয় অথবা অসম্ভব হয়ে যায় তবে সেই বাইক না কেনাই উত্তম। আর সব ঠিক থাকলে সরকারি সব নিয়ম মেনে বাইকটি কিনুন। একটু সময় লাগুক বা অল্প কিছু টাকা উটকো খরচ হোক। তবুও সরকারি আইন মেনে কাজ করুন। এতে করে আপনি শতভাগ নিরাপদ এবং নির্ভেজাল থাকতে পারবেন।

মোটাদাগে এ বিষয়গুলো মেনে পুরাতন বাইক কিনলে আপনাকে অতিরিক্ত ঝামেলা বা খরচ থেকে রক্ষ করবে। আর হ্যাঁ, বাইকটি কতটুকু তেল দিয়ে কত কিলোমিটার চলে সেটি যাচাই করে নেবেন। যাতে আপনার দৈনন্দিন খরচ বাড়তি না হয়। অন্যথায় আপনার সুবিধার চেয়ে অসুবিধা বেশি হয়ে যাবে। এসবের ক্ষেত্রে একজন মেকানিককে দেখিয়ে বাইক কিনলে কেনার সময় ঝামেলা মুক্তভাবে সব কিছু যাচাই করতে পারবেন।

Comments (1)

  • 3 years ago Jalal

    অসাধারণ! খুব ভাল লেগেছে। ধন্যবাদ।

Find Bikes & Scooters

Top Brands

Search Bikes

Recent Reviews

Recent Advice