যারা রাতের বেলা মোটরসাইকেল চালায় তারা অন্ধকারে একটি ভিন্ন জগতের মুখোমুখি হয়। রাতের পরিবেশ দিনের মত কোলাহলপুর্ন থাকেনা। চারপাশে সুনসান ঠান্ডা পরিবেশ। রাতে চারপাশে গাড়ি ও কোলাহল কম থাকলেও সূর্য্যের আলো না থাকার কারণে বাইক চালানো কিছুটা কষ্টসাধ্য। এই পরিবেশে, মোটরসাইকেল চালানো অনেকটা রোমাঞ্চকর হলেও কিছুটা ঝুকিপূর্ন তবে কিছু টিপস জানা থাকলে এই পরিস্থিতি কাটিয়ে উঠা সহজ হয়।
আজ মোটরসাইকেল বিডি'র পাঠকগণে জন্য সেরকম কিছু টিপস নিয়ে উপস্থিত হয়েছি আশাকরি আপনাদের ভালো লাগবে।
হেডলাইটঃ
বাংলাদেশের ট্রাফিক আইন অনুসারে রাতের বেলা হেডলাইট জ্বালানো আবর্শ্যক। যেহেতু রাতে সূর্য্য থাকেনা চারপাশ জুড়ে অন্ধকারাচ্ছন্ন থাকে তাই আমাদের সামনে কি আছে বা কোন দিক দিয়ে যেতে হবে এটা জানার জন্য অবশ্যই হেডলাইট থাকা এবং জ্বালানো দরকার। আপনার হেডলাইট যত উন্নত মানের হবে তত ভালো ভাবে দেখতে পারবেন। হেডলাইট এর ক্ষেত্রে আমার পরামর্শ হল HID হেডলাইট ব্যবহার করা। তবে আশার কথা এই যে এখনকার বাজারে উন্নত মানের সকল ব্র্যান্ডেই HID আলোর হেডলাইট ব্যবহার করে। তাই রাতের বাইকারদের জন্য হেডলাইট একটি গুরুত্বপুর্ন বিষয়।
পিছনের বাতি বা টেইল লাইটঃ
আপনি হেডলাইট দিয়ে সামনে দেখবে আর চলবেন কিন্তু আপনার পিছনে যারা থাকবে তাদের তো আপনাকে দেখতে পেতে হবে । নাহলে যে কোন সময় ঘটে যেতে পারে অনাকাঙ্খিত কোন দুর্ঘটনা। পিছনের লাইট হেডলাইট এর থেকে কিছুটা কম আলোর হলেও এটা আপনাকে পিছন থেকে যেকোন রকমের ধাক্কা থেকে রক্ষা করবে । এবং পিছনের আরোহী বা পথচারীকে আপনার উপস্থিতি জানান দিবে। তাই রাতে মোটরসাইকেল চালানোর ক্ষেত্রে পিছনের বাতি বা টেইল লাইট অনেক গুরুত্ব বহন করে।
পথ নির্দেশক সংকেতঃ
আমাদের দেশের বিভিন্ন রাস্তায় অনেক পথ নির্দেশক রয়েছে। পথ নির্দেশক সংকেত সমুহ সড়ক জনপথ বিভাগ দুই ভাবে সংযুক্ত করেছে যা হল: ১. কালো রাস্তায় সাদা রংয়ে বিভিন্ন রশ্মি বা চিহ্ন অঙ্কন করে এবং ২. রাস্তার বাম পার্শ্বে বিভিন্ন বোর্ডের মাধ্যমে। পথ নির্দেশক সংকেত গুলি আপনাকে আগাম সংকেত দিবে, রাস্তার বাঁক, পার্শ্ব রাস্তা, স্কুল, কলেজ, বাজার এবং সর্বোচ্চ্য গতিসিমা কত হওয়া উচিৎ এই বিষয়ে। রাতে বাইক চালাতে হলে এই সকল সংকেত বিষয়ে আপনার ধারনা রাখা উচিৎ।
প্রতিক্ষেপক লাইটঃ
আপনি কোন দিকে যাবেন তা সামনের এবং পিছনের ড্রাইভার বা পথচারীকে জানানোর জন্য প্রতিক্ষেপক লাইট ব্যবহার কারা উচিৎ। এই সকল প্রতিক্ষেপক লাইট আমাদেরকে অনেক বড় দুর্ঘটনার হাত থেকে রক্ষা করে।
আয়নাঃ
রাতের বেলা অন্ধকারে যদিও আয়নায় তেমন কিছুই দেখা যায়না, তবুও আয়নার সাহায্যে আপনি পিছনে কোন গাড়ি আসতেছে কিনা। পিছনের গাড়িটি আপনার থেকে কত দুরে। পিছনের গাড়িটি ছোট নাকি বড় গাড়ি ইত্যাদি দেখতে সাহায্য করে। যা একজন বাইকারের জন্য অনেক উপকারি।
ডাকাতি আশংকা যুক্ত এলাকা পরিহার করাঃ
দেশের বিভিন্ন জায়গায় মোটরসাইকেল ছিনতাই বা ডাকাতির খবর এখনো বিভিন্ন পত্র পত্রিকায় দেখা যায়। এলাকা বিশেষে কিছু কিছু জায়গা আছে যেগুেলোতে প্রচুর ডাকাতির ঘটনা ঘটে। আপনাকে রাতে মোটরসাইকেল চালানোর আগে আপনার বিচরনের রাস্তা সমন্ধে ধারনা রাখা উচিৎ। কারণ আমরা ছিনতাই বা ডাকাতির সময় অনেক হতাহতের খবরও শুনি। যেহেতু দুষ্টু মানুষের অভাব নেই এবং সময়ের চেয়ে জিবনের মূল্য অনে বেশি। তাই রাতের বেলা চলাচলের ক্ষেত্রে আপনাকে অনেক সচেতন হতে হবে। আপনার একটু ভুল সিদ্ধান্ত বা একটু তাড়াতাড়ি পৌছানের আশা আপনাকে অনাকাঙ্খিত ছিনতাই বা ডাকাতির দিকে ঠেলে দিতে পারে। তাই রাতে চলাচলের ক্ষেত্রে এই বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে ভাবা উচিৎ।
আশাকরি উপরোক্ত বিষয়গুলি মাথায় রেখে আপনি রাতে চলাচল করবেন এবং যেকোন ধরনের অনাকাঙ্খিত ঘটনা থেকে দুরে থাকবেন। আজ আর নয় এর পর অন্য কোন গুরুত্বপুর্ন বাইক রাইডিং টিপস নিয়ে আপনাদের সামনে হাজির হব এই প্রত্যাশায় এবং আপনার রাতের মোটরসাইকেল যাত্রা হোক এই কামনায় শেষ করতেছি।