Bikes Compare

বাজাজ পালসার ১৫০ সিঙ্গেল ডিস্ক না ডাবল ডিস্ক কিনবেন?

বাজাজ পালসার ১৫০ সিঙ্গেল ডিস্ক না ডাবল ডিস্ক কিনবেন?

May 21, 2021

তরুণদের কাছে তুমুল জনপ্রিয় পালসার সিরিজের মোটরসাইকেলগুলো। জনপ্রিয়তার তুঙ্গে আছে পালসারের ১৫০ সিসির মডেলটি। বর্তমানে বাজারে মডেলটি দুই ভার্সনে পাওয়া যাচ্ছে। একটি এইউজি ৪.৫। যেটাকে অনেকেই সিঙ্গেল ডিস্ক ভার্সন বলে চেনেন। অন্যটি ইউজি ৫ বা ডাবল ডিস্ক ভার্সন। অফিসিয়ালি ভার্সনটির নাম বাজাজ পালসার ১৫০ টুইন ডিস্ক।

১৫০ সিসির পালসারের এই দুই ভার্সনের মধ্যে কোন বাইকটি কিনবেন সেটি নিয়ে অনেকের মনেই দ্বিধা রয়েছে। দুই ভার্সনের ইঞ্জিনের ক্ষমতায় তেমন কোনো পরিবর্তন আনা হয়নি। কিন্তু বাহ্যিক দিকে দিয়ে দুই ভার্সনের মধ্যে বেশ কিছু পার্থক্য আছে।

আসুন আগে দুই ভার্সনের মধ্যে পার্থক্যগুলো জেনে নেই। এরপর আপনিই সিদ্ধান্ত নিতে পারবেন পালসারের ১৫০ সিসির কোন ভার্সনটি আপনি কিনবেন।

১. সিঙ্গেল ডিস্ক বনাম ডাবল ডিস্ক

পালসারের ১৫০ সিসির ইউজি ৪.৫ এ ব্যবহার করা হয়েছে সিঙ্গেল ডিস্ক। অন্যদিকে ইউজি ৫ এ রয়েছে ডাবল ডিস্ক। দুই ভার্সনের মূল পার্থক্য অনেকে মনে করে করেন এখানেই। কিন্তু না, খেলা আরো অনেক বাকি আছে!

২. ব্রেকিং সিস্টেম

দুই ভার্সনের ব্রেকিং সিস্টেমে আকাশ-পাতাল তফাৎ আছে। ইউজি ৪.৫ এ আছে ১৩০ মিলিমিটারের সিঙ্গেল ডিস্ক। পেছনে ড্রাম ব্রেক। ইউজি ৫ এর সামনে আছে ১৬০ মিলিমিটারের ফ্রন্ট ডিস্ক। পেছনে ১৩০ মিলিমিটারে ডিস্ক ব্রেক। ফলে ব্রেকিং সিস্টেমে এগিয়ে আছে ডাবল ডিস্ক ভার্সন।

৩. চাকা

সিঙ্গেল ডিস্ক ও টুইন ডিস্কের চাকায় বেশ পরিবর্তন আনা হয়েছে। ইউজি ৪.৫ এর তুলনায় ইউজি ৫ এ মোটা চাকা ব্যবহার করা হয়েছে। ফলে ব্রেকের সময় চাকা পিছলে যাওয়ার আশঙ্কা কম। এছাড়াও নতুন ভার্সনে বেড়েছে হুইল ব্যাস। ফলে ইউজি ৫ লম্বায় অনেকেটা বড়।

৪. সিট

পালসার ১৫০ সিঙ্গেল ডিস্কে আছে সিঙ্গেল সিট। অন্যদিক ইউজি ৫ এ স্প্লিট সিট দেয়া হয়েছে। ফলে নতুন ভার্সন দেখতে আকর্ষণীয় লাগে। এছাড়া নতুন ভার্সনের সিট কিছুটা বড়।

৫. স্পিডোমিটার

ইউজি ৪.৫ এর স্পিডোমিটারের কালার ছিল কমলা। ইউজি ৫ এ দেয়া হয়েছে ব্লু কালার। যা চোখের আরাম দেবে। এছাড়াও সাইড স্ট্যান্ড ইন্ডিকেটর মিটারের মধ্যেই স্থাপন করা হয়েছে। যেটা আগে স্পিডো মিটারের নিচের প্রান্তে লাইটের মধ্যে ছিল।

৬. ইঞ্জিন

সিঙ্গেল ডিস্ক ও ডাবল ডিস্কের ইঞ্জিনে কোন পরিবর্তন নেই। উভয় বাইকে সিঙ্গেল সিলিন্ডার, এয়ার কুলড, ২ ভাল্বস, ডিটিএসআই ইঞ্জিন। যা ১৩.৮ বিএইচপি শক্তি ও ১৩.৪ এনএম টর্ক ক্ষমতা উৎপন্ন হয়। উভয় ভার্সনে একটি ৫ স্পিড গিয়ার বক্স যুক্ত করা হয়েছে।

দুই ভার্সনের গিয়ার শিফটারের মধ্যে পার্থক্য রয়েছে। ইউজি ৪.৫ এ সাধারণ গিয়ার শিফটার দেয়া হয়েছে। অন্যদিকে ইউজি ৫ এ স্পোর্টস বাইকের সিঙ্গেল বার গিয়ার শিফটার দেয়া হয়েছে।

৭. সিটিং পজিশন

ইউজি ৪.৫ এর চেয়ে ইউজি ৫ এর সিটিং পজিশন উন্নত। নতুন ভার্সনের সিটিং পজিশন অনেকেটা স্পোর্টস বা রেসিং বাইকের সিটিং পজিশনের মতো। ফলে নতুন ভার্সনের বাইক দীর্ঘসময় চালালেও অস্বস্তি মনে হবে না। নতুন ভার্সনের পিলিয়ন ফুট রেস্টটা একটু পেছনে সরানো হয়েছে। স্পোর্টস বাইকে এমনটা দেখা যায়।

৮. শক অ্যাবসর্ভার

পালসার ১৫০ ইউজি ৫ এর ফ্রন্ট শক অ্যাবসর্ভার ইউজি ৪.৫ এর তুলনায় মোটা। ফলে দেখতে আকর্ষণীয় লাগে। পেছনের শক অ্যাবসর্ভারে পরিবর্তন আনা হয়নি।

৯. স্টিয়ারিং

নতুন ভার্সনে ক্লিপ হ্যান্ডেলবার নতুন ডিজাইনের। যা ১৮০ সিসিতে দেখা যায়।

১০. চেসিস

পালসার ১৮০ সিসির চেসিস ব্যবহার করা হয়েছে ১৫০ ডাবল ডিস্কে। এর সুইং আর্ম গোলকার। ইউজি ৪.৫ এর সুইং আর্ম বর্গাকার ছিল।

১১. চেইন ও কভার

ইউজি ৪.৫ এবং ইউজি ৫ এর চেইনে পরিবর্তন আনা হয়েছে। নতুন ভার্সনে মোটা চেইন ব্যবহার করা হয়েছে। এই ভার্সনে চেইন কভার নেই। ফলে নিয়মিত চেইন পরিষ্কারের যন্ত্রনা পোহাতে হবে।

১২. স্টার্টিং মেথড

ইউজি ৪.৫ এ সেলফ ও কিক উভয় স্টার্টিং সিস্টেম দেয়া হয়েছে। কিন্তু ইউজি ৫ এ শুধু সেলফ স্টার্টার দেয়া হয়েছে। এতে কিকার নেই।

১৩. লুকিং ও অন্যান্য

পালসারের এই দুই ভার্সনের মধ্যে দেখতে মাসকুলার লাগে নতুন ভার্সন। বর্তমানে উভয় ভার্সনের ইঞ্জিনে কাউল যুক্ত হয়েছে। যা দেখতে অনেকেই আকর্ষণীয়। উভয় বাইকের ওজন ১৪৪ কেজি।

১৪. মাইলেজ

মোট চাকা ও ১৮০ সিসির চেসিস ব্যবহারের কারণে ইউজি ৪.৫ এর তুলনায় ইউজি ৫ এর মাইলেজ কিছুটা কম পাওয়া যাবে। এছাড়াও, ইউজি ৫ এ টপ স্পিড ইউজি ৪.৫ এর তুলনায় কিছুটা কম।

কেনটা কিনবেন?

এতক্ষণ দুই ভার্সনের বাইকের মধ্যে পার্থক্য জানলেন। এখন নিশ্চয়ই সিদ্ধান্ত নিতে পারবেন? যদি তারপরও আপনি সিদ্ধান্ত নিতে না পারেন তাহলে আরো কিছু বিষয় জানিয়ে দেই। আপনি যদি মাইলেজ এবং টপ স্পিড বেশি চান এবং ক্লাসিক ঘরানার মানুষ হন তবে কিনুন সিঙ্গেল ডিস্ক। আর যদি আপনি স্টাইল পছন্দ করেন, ব্রেকিং সিস্টেম উন্নত চান, স্পোর্টি লুক চান তবে কিনুন ইউজি ৫।

অনেকের মনেই একটা প্রশ্ন আছে সেটা হচ্ছে, ডাবল ডিস্ক ভার্সনে কিকার নেই। শীতকালে বা দীর্ঘদিন বাইক না চালালে বুঝি সেলফ কাজ করবে না, বাইক স্টার্ট নেবে না। আপনার এই ভয় অমূলক। যারা দীর্ঘদিন টুইন ডিস্ক চালিয়েছে তারা আমাদের কাছে জানিয়েছে এই ভয় নেই। কেননা, টুইন ডিস্কে শক্তিশালী ব্যাটারি ব্যবহৃত হয়েছে। এখনকার বেশিরভাগ বাইকেই কিকার নেই।

অন্য দিকে একটা কথা ভাবুন, প্রাইভেট কার, মাইক্রো, বাস ও অন্যান্য গাড়িতে কিন্তু কিকার নেই। সেলফ দিয়েই কিন্তু ওসব যানবাহন চালু হয়। তাই এই অমূলক সন্দেহ মন থেকে ঝেড়ে নতুন সিদ্ধান্ত নিন।

Comments (0)

Find Bikes & Scooters

Top Brands

Search Bikes

Recent Reviews

Recent Advice